How to save money to know Student Visa Guide?
কিভাবে বিদেশ/ভিসা নিয়ে প্রতারনা থেকে রক্ষা পাবেন?
জেনে রাখুন প্রতারনার আধুনিক সব কৌশল আপনেরা যারা বিদেশে স্টুডেন্ট বা ভিজিট বা অন্যান্য কোন ভিসার জনেন চেষ্টা করেছেন তারা হয়ত কিছুটা হলেও জানেন যে বিদেশে যাওয়া নিয়ে বিভিন্নি এজেন্সি / ব্যাক্তি কত রকমের প্রতারনা, ছল, চাতুরী করে। যত দিন যাচ্ছে প্রতারনার তত নতুন নতুন কৌশল বের হচ্ছে। আজকে এই রকম কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনা করব, আশা করি সবাই সাবধান হবেন।
১-ফাইল ওপেনিং ফি- যদি কোন এজেন্সি/ব্যাক্তি বলেন যে কাজ শুরু করতে হলে আপনাকে আগেই কোন রকম ফি/চার্জ দিতে হবে, যেমনঃ ফাইল খোলার জননে ফি,রেজিস্ট্রেশন ফি,অফিস খরচ,অফিস ফি,এডমিশন ফি ইত্যাদি তাহলে সাবধান হবেন, কারন কাজ না হলে এই টাকা হয়ত ফেরত পাবেন না। (তবে কিছু ক্ষেত্র আছে,যেখানে আগেই ফি দিতে হয় ভিসা কাউন্সেলিং বাবদ অথবা এজেন্ট আগেই টাকা ইনভেস্ট করেন বিধায় সিকিউরিটি বাবদ পূর্বেই কিছু অর্থ রাখেন যাতে ক্লায়েন্ট মাঝপথে ভেগে না যান বা পরে টাকা নিয়ে ঘাপলা না করেন)
২- মেডিকেল ফি- ভুলেও না বুঝে মেডিকেল ফী দিয়ে দিবেন না, কেউ যদি বলে মেডিকেল ত করতেই হবে, ত আগেই করে নেন, বা আগে করে এরপরই এপ্লাই করতে হবে, তাহলে সাবধান। এই মেডিক্যাল ফি নিয়ে অনেক আগে থেকেই ব্যবসা হয়। তারা আপনাকে তাদের নির্ধারিত নাম সর্বস্ব মেডিকেল সেন্টার নিয়ে গিয়ে কাজ করাবে, কারন তারা সেইসব মেডিকেল সেন্টার থেকে কমিশন পায় বা অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ টাকাই মার যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রে আপনার মেডিকেল লাগতেই পারে, সেক্ষেত্রে এম্বেসি বা VFS মনোনীত কোন মেডিকেল সেন্টার থেকে মেডিক্যাল করবেন অথবা আগেই বলে দিবেন যে আপনার নিজের পছন্দের জায়গা থেকে মেডিকেল করবেন।
৩-পাসপোর্ট যদি কোন এজেন্সি/ব্যাক্তি রাখতে চায় (যেটার সঙ্গত কারন আছে, কারন অনেক সময় ক্লায়েন্ট কাজ না করেই মাঝপথে চলে/ভেগে যায় ) তাহলে সেই ব্যাক্তি বা কোম্পানির বেপারে নিশ্চিত হয়ে পাসপোর্ট দিবেন, কারনঅনেক ব্যাক্তি বা কোম্পানি আছে, যারা পাসপোর্ট নিয়ে কাজ না করে পরবর্তীতে এই পাসপোর্ট ফেরত নেবার নামে টাকা দাবী করবে।
৪-যদি কেউ আপনাকে ভিজিত ভিসার অফার করে, তাহলে জেনে নিন, কিভাবে ভিসা হবে অথবা কোন রুটে আপনাকে পাঠান হবে। আগেই বলে দিন যে ভিসা আপনি নিজে এম্বেসি বা ভি এফ এস জমা দিবেন এবং অবশ্যই নিজে তুলবেন। ভুলেও এম্বেসি বা ভি এফ এস থেকে পাসপোর্ট তোলার সময় অন্য কাউকে দায়িত্ব দিবেন না, এবং পাসপোর্ট তোলার পর নিজে খুলে দেখবেন ভিসা আছে কিনা। অনেক সময় তারা বলে যে আপনি নিজে জমা দিবেন কিন্তু তোলার সময় অন্য কাউকে এপ্লিকেশন ফর্মে দায়িত্ব দেয়া থাকে। অসাধু ব্যাক্তিরা যেটা করে সেটা হচ্ছে তারা কাউন্তার থেকে নিজেদের লোক দিয়ে ভিসা রিফিউজড হওয়া পাসপোর্ট তুলে, সেটা ক্লায়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছানর আগেই পাসপোর্টে নকল স্টিকার লাগিয়ে দেয়, ক্লায়েন্টকে ভি এফ এস বা এম্বেসির আসে পাশে রাখবে এবং বলে দিবে যে ভিসার পরপরই টাকা দিতে হবে। তাই তখন তারা সেই স্টিকার লাগান পাসপোর্ট দেখিয়ে আপনার কাছে থেকে টাকা নিয়েই গায়েব হয়ে যাবে, আপনি ভিসা ভেরিফাই করার সুযোগ পাবেন না অথবা চালাকিটা ধরতেই পারবেন না।
৫-সাঁজাল অফিসঃ কিছু কোম্পানি আছে, যারা প্রথমে একটা ভাল ইনভেস্ট করে ভাল জাঁকজমকপূর্ণ অফিস দেয়, অফিসে থাকে নানারকমের স্টাফ ( বিশেষ করে স্মার্ট মেয়ে ), এসব দেখে অনেকে বিভ্রান্ত হয়ে তাদের কে বিশ্বাস করে বসে, এরপরে তারা অল্প অল্প করে অনেক মানুষের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা নিয়ে ভেগে যায়। মানুষ অল্প টাকার পরিমাণ এবং অফিসের অবস্থা দেখে টাকা দিয়ে দেয়। এইরকম অনেক কোম্পানি কোটি কোটি টাকা নিয়ে ভেগে গেছে। তাহলে কিভাবে বুঝবেন এইসব অফিস/কোম্পানি? আগে খোজ নিয়ে দেখুন অফিসটি সেখানে কত দিন ধরে আছে, অফিসের নিচে দারোয়ান (যদিও দারোয়ান কে আগেই মেনেজ করে রাখতে পারে) বা আসে পাশের মানুষকে জিগেস করে জানুন। আমার মতে কমপক্ষে ৩-৪ বছর ধরে যে কোম্পানি একি জায়গায় কাজ করছে সেটাকে প্রাথমিক বিবেচনায় “ঠিক আছে” বলে ধরে নেয়া যেতে পারে। জেনে নিন, তাদের কি রকমের লাইসেন্স আছে অথবা আগে যে কাজ করেছে তার এভিদেন্স আছে কিনা। এক্ষেত্রে একটা বেপার হচ্ছে যে, ধরেন অফিস অনেকদিন ধরে আছে এবং লাইসেন্সও আছে, তাই আপনি বিশ্বাস করে আগে টাকা দিলেন, এখন কথা হচ্ছে যে, পরে যদি তারা সমস্যা করে,এইরকম প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির সাথে আপনি একা মোকাবিলা করতে পারবেন কিনা !!? আর যদি কোন ব্যাক্তি হয়, জেনে নিন তার ঢাকায় কোন স্থায়ী বাড়ি/অফিস আছে কিনা এবং অবশ্যই তার সাথে চুক্তি করার সময়ে সব রকমের আইডি ভেরিফাই করে নিবেন।
৬-কিডন্যাপ/অপহরনঃ এবার আসি সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বেপার নিয়ে, অনেকেই ভিসার জননে বাংলাদেশের বাইরে যান, কারন আমাদের এখানে সব ভিসা হয় না, অনেক ভিসার জননে ইন্দিয়া যেতে হয় বা অন্য দেশে ভিসা পেতে সহজ হয় বলে অনেকেই অন্য দেশে যেতে চান। সেক্ষেত্রে সব থেকে ঝুঁকি হচ্ছে আটকে রেখে টাকা আদায় করা। আপনি দেখবেন যে এইখেত্রে সব থেকে বড় ভুল ক্লায়েন্টরা নিজেরাই করে থাকেন। কারন আপনি নিজে কারো ফাদে পা না দিলে কেউ রাস্তা থেকে জোর করে আপনাকে ধরে নিয়ে যাবে না। যেমন ধরেন কেউ আপনাকে বলল যে ইন্দিয়া থেকে ভিসা করে দিবে। প্রথমেই উপরের ৪ নাম্বার পয়েন্ট কনফার্ম করে নিবেন। এরপরে আগেই ( অবশ্যই আগে বলবেন ) ব্যাক্তি বা কোম্পানি কে বলে দিবেন যে, আপনি ইন্দিয়া বা অন্য দেশে গেলে সেখানে আপনার নিজের জায়গায় থাকবেন, খাবেন এবং সাক্ষাৎ করার দরকার হলে আপনার নিজস্ব জায়গায় ( আপনার হোটেল, বাসা বা পাবলিক প্লেস - সুপারসপ, শপিং মল, বড় রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি ) দেখা করবেন। ভুলেও অল্প কিছু পয়সা বাঁচাতে আপনার এজেন্ট বা কোন ব্যাক্তির সাথে থাকবেন না বা তাদের জায়গায় যাবেন না। আপনি হয়ত বেশীর বেশি ভি এফ এস(VFS) বা এম্বেসি তে যাবেন, ভুলেও তাদের সাথে ১ মিনিটের জননেও বাইরে কোথাও যাবেন না, যদি বলে আপনার হোটেল,বাসা ইত্যাদি নিচে/আসেপাশে আসেন বা এম্বেসির সামনে কোথাও বা এয়ারপোর্টের সামনে ইত্যাদি, ভুলেও যাবেন না এবং এইসব বেপার আগেই কড়া করে বলে রাখলে যাদের মনে কুমতলব আছে তারা আপনাকে প্রথমেই নিতেই চায়বে না। মাথায় রাখবেন যারাই এই ধরনের বিপদে পড়েছেন তারা সবাই নিজে থেকে ফাঁদে পা দিয়েছে। আপনাকে কেউ পাবলিক প্লেস থেকে ধরে নিয়ে যাবে না বা সম্ভবও না। ভি এফ এস বা এম্বেসির যে এড্রেস দিবে সেটাও আপনি নিজে অনলাইন থেকে চেক করে নিশ্চিত হয়ে নিবেন অবশ্যই।
৭- শো মানি- অনেকে এমন অফার দিবে যে, আপনাকে অমুক জায়গার ভিসা করে দিবে অথবা অমুক জায়গায় নিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তারা অনেক সময় আপনাকে ভিসাও করে দিবে অথবা একটা নকল ভিসা দেখিয়ে আপনার টিকেটও করতে পারে। এক্ষেত্রে তারা যেটা করবে যে, আপনাকে বলবে আপনার সাথে কিছু টাকা নিতে হবে, যেটাকে আমরা বলি শো মানি (show money). এই শো মানিই হচ্ছে তাদের টার্গেট। এই শো মানি হাতিয়ে নেয়ার যে কত কৌশল আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। তাহলে উপায় কি ? আবার এই শো মানি আসলেই অনেক ক্ষেত্রে দরকার, কারন আপনি নিজে একা বৈধভাবে গেলেও আপনার শো মানি লাগবে। এখন যেটা করতে পারেন যে, এই শো মানি সাথে নিলে কোন অবস্থায়,আবার বলি- “কোন অবস্থায়ই”কারো হাতে দিবেন না অথবা এই টাকা ব্যাগে রেখে কোথাও যাবেন না। মাথায় রাখবেন এই টাকা আপনার, তাই আপনি না দিতে চায়লে পাবলিক প্লেস বা এয়ারপোর্ট থেকে কেউ জোর করে নিতে পারবে না। আপনার টাকা কারো কাছে দিয়েছেন , ত শেষ !!
৮- নিরাপদ ভন্দামিঃ আজকাল নতুন এক কৌশল চলে, আপনি হয়ত দেখবেন অফিস পুরাতন, ব্যবসা পুরাতন, মানুষও বিশ্বস্ত। তারা আপনাকে বলবে বড় একটা অংক এডভান্স দিতে। আপনার থেকে সময়ও নিবে কয়েক মাস। এরপর কয়েক মাস পরে কাজ করতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করে আপনার টাকাও ফেরত দিয়ে দিবে, আপনি হয়ত খুশি যে টাকা ফেরত পেয়েছেন অন্তত। এখানে কৌশল তা হচ্ছে আপনার মত এই রকম অনেকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সেটা নিয়ে নিজের ব্যবসাতে কাজে লাগিয়ে আবার টাইম মত ফেরত দিয়ে দেয়া। আপনিও চুপ , তারও ব্যবসায় ফ্রী ইনভেস্টমেন্ট।
৯- কই মাছের তেল দিয়ে কই মাছঃ এই কৌশলটিও অনেকে ধরতে পারেন না। এক্ষেত্রে যেটি হয়, আপনাকে বলা হবে যে আপনি এম্বেসি/VFS এ নিজে সবরকমের ফি/চার্জ দিয়ে দাঁড়াবেন এবং নিজে তুলবেন, বেশীর ভাগ কাগজ আপনাকেই দিতে হবে এবং সব আপনি করবেন। তারা শুধু আপনাকে বলে দিবে কি কাগজ আর কোথায় দিতে হবে। কিন্তু তারা এই কাজের জননে আপনার কাছে অনেক মোটা অংকের টাকা চায়বে। তারা বলবে যে তাদের “স্পেশাল সিস্টেম” এর কারনে আপনি ভিসা পাবেনই। তাই আপনিও হয়ত মোটা অংকের টাকাতে রাজি হয়ে যাবেন। যেটা তারা করে, তা হচ্ছে যে, আপনার মত যোগ্য ব্যাক্তি/ ক্লায়েন্ট, যারা এমনি হয়ত দাড়ালে ভিসা পাবেন, তাদের অনেকজন কে ক্লায়েন্টের টাকা দিয়েই দাড়া করাবে। এখন ৫ জন দাড়া করালে একজনের ত ভিসা হতেই পারে, আর একজন হওয়া মানেই তাদের মোটা অংকের লাভ, তারা কিন্তু জাস্ট আপনাকে ভিসা কাউন্সেলিং দিচ্ছে, কিন্তু আপনি ভেবেছেন হয়ত তারা বিশেষ কিছু করে ভিসা করে দিয়েছে। আসলে এটা পুরাই কই মাছের তেল দিয়ে কই মাছ ভাজার মত। তাই আপনার যদি ৩-৪ দেশের ভিজিট থাকে এবং ভাল ব্যাংক এবং সব কাগজ থাকে তাহলে আগে জেনে নিন আপনি ভিসা পাবার জননে কতটা যোগ্য, অনলাইনে সব তথ্য পাবেন। (উল্লেখঃ আজকাল এম্বেসিগুলা অনেক যোগ্য ব্যাক্তিকেও খামখেয়ালি/উদাসীনতা বা অযৌক্তিক কারনে ভিসা দেন না , তাই বাধ্য হয়ে মানুষ এইসবের শরণাপন্ন হন) উপরোক্ত কৌশল গুলা ছাড়াও হয়ত আরো অনেক আছে, আবার দিন দিন নতুন নতুন কৌশল বের হচ্ছে। আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে, আপনি নিজে যাতে এমন কিছু করে না বসেন যেটা আপনাকে এজেন্ট/ কোম্পানির কাছে ধরা দিতে বাধ্য করে। যেকন অফার আগে পেলে সেটা নিয়ে সবার সাথে (অবশ্যই যাদের অভিজ্ঞটা আছে) কথা বলুন। নিজে অনলাইনে ঘাটাঘাটি করুন। কোন একটা রেফারেন্স ছাড়া কারো কাছে না যাওয়াই ভাল। এখন সমস্যা হচ্ছে যে, আমাদের দেশে এখনও অনেক সৎ ও নিষ্ঠাবান কোম্পানি, এজেন্ট, কাউন্সেলর আছে, কিন্তু চারিদিকে এত ভণ্ডামি কারনে মানুষ এখন সবাইকেই সন্দেহের চোখে দেখে। মাঝে মাঝে কিছু মানুষ/ক্লায়েন্ট/পেসেঞ্জার এমন বেশি !! সন্দেহ করে ফেলেন যে একজন সৎ এজেন্ট বা কোম্পানিও বিরক্তি বোধ করেন। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল যে, অনেক সময় ক্লায়েন্ট বা পেসেঞ্জারও ভণ্ডামি বা প্রতারনা করেন। এর মধ্যে আছে- “কাজের মাঝেই ভেগে যাওয়া”,“কাজ হলে টাকা না দেয়া বা সম্পূর্ণ না দেয়া“, “কাজের পর টাকা যোগার করতে না পারা”, এমনকি জোর করে কাজ করিয়ে নিয়ে টাকা না দেয়ার মত ঘটনাও আছে বৈকি। তাই এসব ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে অনেক সময় এজেন্ট বা কোম্পানি কিছু কিছু নিয়ম করতে বাধ্য হয়। এক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট এবং এজেন্ট দুই জনের উচিৎ এমন কোন নিয়ম বা পদ্ধতি বের করা যেটা দুপক্ষের জননেই নিরাপদ এবং করনীয় হয়। এজেন্ট কে যেমন নিশ্চিত হতে হবে কাজের পর তিনি যথাসময়ে সব টাকা পাবেন, ঠিক তেমনি ক্লায়েন্টকেও নিশ্চিত হতে হবে তার নিরাপত্তা ও পেমেন্ট সিকিউরিটির বেপারে। ক্লায়েন্ট বা পেসেঞ্জারকে সস্তা বা সহজ পদ্ধতি না দেখে নিরাপদ ও নিশ্চয়তার বেপার মাথায় রাখতে হবে। মাথায় রাখবেন ভিসা দেবার সকল ক্ষমতা এম্বেসির।
No comments:
Post a Comment